আবু রায়হান, স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে পূর্ব সুন্দরবনে জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা। চোরাশিকার ও বন অপরাধের আশঙ্কায় এবারের ঈদে ছুটি বাতিল করা হয়েছে বনরক্ষীদের।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আওতাধীন প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার হেক্টর বনভূমি সুরক্ষায় ৩১টি ইউনিট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টানা কাজ করে যাচ্ছেন। ছুটি বাতিল করে জোরদার করা হয়েছে ‘কম্বিং অপারেশন’।
বন বিভাগ সূত্রে আরও জানা যায়, সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে বনের সুরক্ষায় নেওয়া হয়েছে একাধিক কৌশলগত পদক্ষেপ। হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ ধরার মতো অপরাধ ঠেকাতে চালু করা হয়েছে পায়ে হেঁটে প্যারালাল লাইন সার্ভে, ফুট পেট্রোলিং, প্রযুক্তির ব্যবহার ও গোয়েন্দা নজরদারি।
গত মে মাসেই এসব উদ্যোগের সুফল পাওয়া গেছে। শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪২ কেজি হরিণের মাংস, তিনটি হরিণের মাথা, ১২৫ কেজি শিকারের ফাঁদ, তিন টন অবৈধ জাল, বিষযুক্ত ৯৫ কেজি মাছ, ২২৬টি কাঁকড়া ধরার ফাঁদসহ ১১টি নৌকা ও ট্রলার। গ্রেপ্তার করা হয়েছে আটজন, দায়ের করা হয়েছে ৩৭টি বন মামলা।
বন বিভাগ আশঙ্কা করছে, ঈদের ছুটিতে চোরাশিকারি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। তাই এবার আরও কড়া নজরদারিতে রাখা হচ্ছে পুরো বনাঞ্চল। নিয়মিত অভিযান, পায়ে হাঁটা টহল, টহল ফাঁড়িতে রাত্রিকালীন প্রস্তুতি ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “বন, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সীমিত জনবল নিয়েও আমরা সুন্দরবন রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এবার ঈদে ছুটি না নিয়ে যারা দায়িত্ব পালন করছেন, তারা প্রকৃত অর্থে বনযোদ্ধা।”
তিনি আরও জানান, “চোরাশিকার ও অপতৎপরতা রুখতে স্থানীয়দেরও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তথ্যদাতাকে পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সুন্দরবন রক্ষায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”