নড়াইল জেলার লোহাগড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দোকার মহিউদ্দীন ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ শহীদ হন। অথচ তার ছেলে বুলবুল খন্দোকার জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের জন্মসাল দেখিয়েছেন ১৯৮৩! শহীদের মৃত্যুর ১২ বছর পর সন্তান জন্ম—এ দাবি ঘিরে চলছে ব্যাপক আলোচনার ঝড়।
এই অভিযোগ উত্থাপন করেছেন বুলবুল খন্দোকারের ভাগনে শাহনাজ মো. ফারুক। তিনি ২০২৪ সালের ৪ মার্চ নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, বুলবুল খন্দোকার প্রকৃতপক্ষে ১৯৬৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার আগের নাম ছিল খন্দোকার নাছিরউদ্দীন। নাম ও জন্মতারিখ পরিবর্তন করে তিনি এখন সরকারি চাকরিতে বহাল রয়েছেন।
ফারুকের ভাষ্য, “আমার নানা শহীদ হয়েছেন ’৭১ সালে, তখনো আমার মামার জন্মই হয়নি। তাহলে ১৯৮৩ সালে জন্ম কীভাবে সম্ভব?”
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, বুলবুল বর্তমানে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও গবেষণা বিভাগে কর্মরত। তিনি ২০১৫ সালে অফিস সহায়ক পদে চাকরি পান এবং চাকরির সুবিধার্থে ২০১৬ সালে এনআইডি সংশোধন করে পিতার নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং জন্ম তারিখ ১৯৮৩ সালের ১২ জুন করেন।
এ নিয়ে ফোনে কথা বললে বুলবুল খন্দোকার নিজেই বয়স সংশোধনের বিষয়টি স্বীকার করেন। বলেন, “আমার বাবা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বয়স সংশোধনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক অবগত ছিলেন।”
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, “অভিযোগ তদন্তসাপেক্ষে সত্যতা পেলে সংশোধন বাতিল করা হবে এবং পূর্বের তথ্য পুনরায় কার্যকর করা হবে।”
এমন স্পর্শকাতর ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধার সম্মান, জাতীয় পরিচয়ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার জবাবদিহিতা—সবই প্রশ্নের মুখে।
সূত্র- আজকের পত্রিকা