বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে স্লুইজগেট খুলে দিয়ে লবণ পানি প্রবেশ করিয়ে কৃষিজমিতে ভয়াবহ ক্ষতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ২০ গ্রামের কৃষকেরা।
বুধবার (১১ জুন) সকালে বলইবুনিয়া ইউনিয়নের শ্রেণিখালী স্লুইজগেটের সামনে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে অংশ নেন বিভিন্ন ইউনিয়নের শত শত কৃষক। তাদের দাবি—প্রভাবশালী একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে স্লুইজগেটের জলকপাট খুলে রেখে মাছ শিকার করছে, আর তাতে ফসলি জমিতে ঢুকছে লবণ পানি। ফলাফল—ফসলহানি, গোখাদ্যের সংকট, ও কৃষক-পরিবারের দুর্দশা।
কৃষকেরা অভিযোগ করেন, শ্রেণিখালী ও সোনাখালী স্লুইজগেট দুইটি ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় থেকে কিছু ব্যক্তি দখলে নিয়ে রেখেছে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে তারা ইচ্ছামতো গেট খুলে দিয়ে খালে জাল ফেলছে, এমনকি বিষ প্রয়োগেও মাছ ধরছে। এতে অন্তত ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার কৃষকের প্রায় দুই হাজার হেক্টর ফসলি জমি লবণ পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বোরো ও আমন মৌসুমে ফলন কমে গেছে অর্ধেকে। গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত ঘাস পচে গিয়েছে, ফলে দেখা দিয়েছে গোখাদ্যের তীব্র সংকট।
বক্তারা বলেন, একাধিকবার প্রশাসনকে জানানো হলেও তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অবিলম্বে স্লুইজগেট বন্ধ করে লবণ পানি ঢোকা ঠেকাতে না পারলে এলাকার কৃষি অর্থনীতি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন জামায়াত নেতা মাওলানা নাজির আহমেদ, বিএনপি নেতা খলিলুর রহমান শিকদার, সাবেক ছাত্রনেতা তরিকুল ইসলাম শান্ত, শিক্ষক কামরুজ্জামান নাসির, কৃষক মাওলানা মঞ্জুরুল আলমসহ আরও অনেকে।
এ বিষয়ে বলইবুনিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এস এম আলী আশরাফ জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে স্লুইজগেটের চাবি আর পূর্বের কমিটির হাতে নেই। বিষয়টি উপজেলা কৃষি অফিসার ও ইউএনওকে অবহিত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ বদরুদ্দোজা জানান, স্লুইজগেট খোলা ও লবণ পানি প্রবেশ সংক্রান্ত অভিযোগ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। কৃষকের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।